জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৪

যেকোনো মুহূর্তে কারামুক্তি সকল মামলায় ফখরুল আমীর খসরুর জামিন

ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত
মুক্তিবাণী অনলাইন ডেক্স :

বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া সকল মামলায় জামিন হয়েছে। এখন কারামুক্তিতে আইনগত কোনো বাঁধা নেই। জামিন আদেশ স্থগিত কিংবা অন্য মামলায় গ্রেফতার না দেখানো হলে যেকোনো মুহূর্তে ঘটতে পারে কারামুক্তি।

গতকাল বুধবার সর্বশেষ প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা মামলায় তাদের জামিন মঞ্জুর হয়। ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ফয়সাল আতিক বিন কাদের তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। এ তথ্য জানিয়েছেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর-ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা না থাকায় কারামুক্তিতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন তাদের আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ। এর আগে এ মামলায় ঢাকার চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর হয়। ওই আদেশের বিরুদ্ধে মহানগর দায়রা জজ আদালতে গত ৬ ফেব্রুয়ারি জামিনের আবেদন করেন তাদের আইনজীবী। আদালত শুনানির জন্য ১৪ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিরুদ্ধে গত ২৮ অক্টোবর এবং এর পরের সংঘর্ষ ও সহিংসতাকে কেন্দ্র করে ১১টি মামলা হয়। এর আগে ১০টিতে তিনি জামিন লাভ করেন। প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার মামলাটি ছিলো তার জামিন না হওয়া সর্বশেষ মামলা।

পক্ষান্তরে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে ১০টি মামলা হয়। এর আগে তিনি ৯টি মামলায় জামিন পান। গতকাল তিনিও প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার মামলায় জামিন লাভ করেন। এর আগে গত ১৭ জানুয়ারি রাজধানীর পল্টন থানায় হওয়া একটি মামলায় জামিন লাভ করেন মির্জা ফখরুল। এর আগে ১০ জানুয়ারি ঢাকার সিএমএম আদালত ৯টি মামলায় তাকে জামিন দেন। গত ২৯ অক্টোবর গ্রেফতার করা হয় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে।

২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে পুলিশের সঙ্গে দলটির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় করা মামলায় ২ নভেম্বর গ্রেফতার করা হয় আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে। তার থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।

গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ চলাকালে কাকরাইলে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এ সংঘর্ষ পরে বিজয়নগর পানির ট্যাংক ও শান্তিনগর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।

বিকেল ৩ টার দিকে পুলিশ গুলি, টিয়ার সেল, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়লে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এতে বিএনপির মহাসমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়। এ সংঘর্ষে পুলিশের এক সদস্য, যুবদল নেতা ও একজন সাংবাদিক নিহত হন। আহত হন পুলিশের ৪১ ও আনসারের ২৫ সদস্য। এছাড়া কমপক্ষে ২০ জন সাংবাদিক আহত হন।

এ ঘটনার পর গুলশানের বাসা থেকে মির্জা ফখরুলকে আটক করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। এরপর তাকে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুরের মামলায় আদালতে হাজির করা হলে আদালত তার জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়।

অন্যদিকে গত ২ নভেম্বর দিনগত রাত ১টার দিকে গুলশানের একটি বাসা থেকে আমীর খসরুকে আটক করে ডিবি। পরদিন ৩ নভেম্বর সমাবেশ চলাকালীন সংঘর্ষে পুলিশ সদস্য নিহতের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। মামলায় তার ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ড শেষে ৯ নভেম্বর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। গ্রেফতারের পর মির্জা ফখরুলের বিরুদ্ধে ১১ মামলা ও আমীর খসরুর বিরুদ্ধে ১০ মামলা দায়ের করা হয়। সংঘর্ষকে কেন্দ্র ঢাকাসহ সারাদেশে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে বহু নতুন মামলা দায়ের করা হয়। এসব মামলায় ২০ হাজারের বেশি নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করে কারাগারে আটকে রাখা হয়। জাতীয় নেতা, বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে কারাগারে আটক রেখে গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করা হয়।

সর্বশেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪, ০৩:১৬
মুক্তিবাণী

পাঠকের মন্তব্য

ফেসবুকে

সর্বশেষ আপডেট

ভিডিও