শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, আমাদের দেশে একটা বিপ্লব হয়েছে। বিপ্লবের পরে কোনকিছু আগের সিস্টেমে চলে না, কিন্তু আমরা এখনো সিস্টেম ধরে রেখেছি। প্রশাসনের কারো কারো অসহযোগিতার কারণে দেশে স্থবিরতার সৃষ্টি হচ্ছে। তবে, সিস্টেম ভাঙার প্রয়োজন হলে সিস্টেম ভাঙা হবে, প্রয়োজন দেখা দিলে প্রশাসনে অসহযোগীদের স্থলে নতুন নিয়োগ নিয়েও সরকার ভাববে।
শনিবার নগরীর সার্কিট হাউসের সম্মেলন কক্ষে দ্রব্যমূল্যের নিয়ন্ত্রণ এবং সিন্ডিকেট প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম বিভাগ এবং জেলা দফতরসমূহের কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় কালে তিনি এসব কথা বলেন। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সিন্ডিকেট ভাঙতে সরকারি কর্মকর্তাদের সদিচ্ছা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন উপদেষ্টা।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামানের সভাপতিত্বে চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল ইসলাম, জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মাসুদ আহম্মদ, জেলা পুলিশ সুপার রায়হান উদ্দিন খান, বিভিন্ন সরকারি দফতরের কর্মকর্তা, জুলাই বিপ্লবের সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি, মোহাম্মদ রাসেল ও জুবাইদুলসহ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা বলেছেন, সরকারের পক্ষ থেকে ভোক্তা অধিকারের ওপর স্পষ্ট নির্দেশনা দেয়া আছে যাতে টাস্ক ফোর্সের মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়। ঢাকায় বাণিজ্য সচিব নিজে গিয়ে এ কাজ পরিচালনা করছেন। ট্রাক সেলের মাধ্যমে কৃষকের পণ্য সরাসরি ভোক্তাদের কাছে পৌঁছে দেয়ার যে পরিকল্পনা সেটা ঢাকায় চালু হয়েছে। চট্টগ্রামেও অতিশীঘ্রই এটা চালু করতে হবে।
তিনি আরো বলেছেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে প্রশাসনকে সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে। সিন্ডিকেটগুলোর উৎস চিহ্নিত করে প্রয়োজনে বিশেষ ক্ষমতা আইনে গ্রেফতার করতে হবে। যতবড় ক্ষমতাধরই হোক না কেন তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলে বাজার ব্যবস্থাকে স্বাভাবিক পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে। প্রাইভেট সেক্টর ও উদ্যোক্তাদেরকে নিয়ে সিন্ডিকেটকে বাইপাস করে একটা স্থায়ী সমাধানের পথে এগোতে হবে। বিগত কিছু বছর ধরে কৃষি উদ্যোক্তা এবং শ্রমজীবী থেকে শুরু করে তরুণ সমাজ পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। কোনো সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদল যাতে আপনাদের বাঁধা দিতে না পারে সেজন্য সরকার এবং প্রশাসন সর্বোত্তম সহযোগিতা করবে।
উপদেষ্টা বলেছেন, সরকারের সবগুলো দফতরের মাঝে সমন্বয় ঘটাতে হবে। মানুষের ভোগান্তি কমাতে এবং জনজীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে সবাইকে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। দ্রব্যমূল্য বা আইন শৃঙ্খলার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মাঝে জবাবদিহিতা ও সমন্বয় থাকতে হবে। নতুন বাংলাদেশে মানুষের ভোগান্তি কমানোর ক্ষেত্রে আমাদের সর্বোত্তম চেষ্টা করে যেতে হবে। এতে মানুষের মাঝে কর্মস্পৃহা বৃদ্ধি পাবে এবং বৈষম্যহীন এক নতুন বাংলাদেশের সূচনা হবে।
সমন্বয়করা তাদের বক্তব্যে বলেছেন, দ্রব্যমূল্য উর্ধ্বগতির কারণে মানুষের জীবনযাপন কষ্টকর হয়ে উঠেছে। সেজন্য ছাত্ররা নিজ উদ্যোগে আগামীকাল থেকে বাজারে পণ্যের দাম স্বাভাবিক রাখার জন্য কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি পণ্য নিয়ে এসে আমরা বাজারজাত করব। রেয়াজুদ্দিন বাজার ও কর্ণফুলী মার্কেটে পণ্য ক্রয়ের রশিদ ব্যবসায়ীদেরকে দোকানের সামনে টাঙিয়ে রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও পণ্যর দাম কমানোর ক্ষেত্রে অব্যশই সিন্ডিকেটদের পাশাপাশি যারা সিøপ বাণিজ্য করে তাদের বিরুদ্ধেও অভিযান চালাতে হবে।
পাঠকের মন্তব্য