জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৪

চাতলাপুর স্থল শুল্ক স্টেশনকে পূর্ণাঙ্গ স্থল বন্দর হিসেবে গড়ে তুলতে চায় সরকার!

মুক্তিবাণী অনলাইন ডেক্স :

ভারতে রপ্তানি আয় বাড়াতে চাতলাপুর স্থল শুল্ক স্টেশন ও অভিবাসন কেন্দ্রকে একটি পূর্ণাঙ্গ স্থল বন্দর হিসেবে গড়ে তুলতে চায় সরকার। সেই লক্যে প প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। 


এখন চলছে এর সম্ভাব্যতা যাচাই। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ মঙ্গলবার এই শুল্ক স্টেশন পরিদর্শন করে যান। সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সুত্র জানিয়েছে চাতলাপুর স্থল শুল্ক স্টেশনকে একটি পূর্ণাঙ্গ স্থল বন্দর করতে বিদ্যমান সুবিধা অসুবিধা জানার জন্য সচিবের এই পরিদর্শন।


সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, দেশ স্বাধীনের আগ থেকেই মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার চাতলাপুর সীমান্তে চাতলাপুর স্থল শুল্ক স্টেশন ও অভিবাসন কেন্দ্রের কার্যক্রম শুরু হয়। সীমান্তের ওপারে রয়েছে ভারতের কৈলাশহর হয়ে আগরতলা। প্রথমে এই সীমান্ত হয়ে বৈধ পথে দুই দেশে লোকজন পারাপার শুরু হয়। পরে শুরু হয় পণ্যদ্রব্য আমদানি রপ্তানি। বর্তামানে ভারতে বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিক দ্রব্যাদি,মাছ শুঁটকি সিমেন্টসহ কয়েকটি পণ্য ভারতে যায়। পাশাপাশি ভারত থেকে সাতকরা আদাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যদ্রব্য বাংলাদেশে আসে।


দেশীয় রপ্তানিকারকরা জানান, এই স্থল শুল্ক স্টেশন হয়ে আমদানির চেয়ে ভারতে রপ্তানিপণ্যই বেশি যায়। অবশ্য যোগাযোগ ও অবকাঠামো সমস্যা বিদ্যমান ছিল অনেকদিন। এমনকি বাংলাদেশি পণ্যবাহী গাড়িগুলো সীমান্তে আসার পর প্রথমে মালামাল বাংলাদেশ জিরো পয়েন্টে আনলোড করা হতো। পরে ভারতীয় ট্রাক এসে সেসব পণ্য বাংলাদেশ সীমান্তের অভ্যন্তর থেকে নিয়ে যেত। ফলে বাড়তি অর্থ আর সময় ব্যয় করতে হতো ব্যবসায়ীদের। চরম ভোগান্তির শিকার হতেন আমদানি রপ্তানিকারকেরা।যেকারণে চাতলাপুর স্থল শুল্ক স্টেশন ও অভিবাসন কেন্দ্রকে পূর্ণাঙ্গ স্থল বন্দর করার দাবি জানিয়ে আসছিলেন ব্যবসায়ীরা।


আমদানি রপ্তানিকারক পার্থ চৌধুরী মৌলভীবাজার২৪ ডট কমকে জানান, বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের ভোগান্তি কমাতে গত এপ্রিল মাস থেকে এই স্থল শুল্ক স্টেশন হয়ে সবধরনের পণ্যদ্রব্য ভারতে সরাসরি রপ্তানি শুরু হয় । বাংলাদেশি পণ্যবাহী ট্রাক/ট্যাঙ্কলরিগুলো সরাসরি ভারতে প্রবেশ করতে শুরু করে। পাশাপাশি ভারতীয় পণ্যবাহী গাড়িগুলোও সরাসরি বাংলাদেশে আসছে। পাশাপাশি গত আগস্ট মাস থেকে ভারতের আসাম মেঘালয় থেকে জ্বালানি তেল নিয়ে ভারতীয় তেলবাহী ট্যাঙ্কগুলো যাওয়া আসা শুরু হয় ।


এছাড়া চলমান দুর্গাপূজার আগে ভারতে ইলিশ রপ্তানি শুরু হলে এই স্থল শুল্ক স্টেশন হয়ে প্রায় সাড়ে ৩৮ হাজার কেজি ইলিশ ভারতে রপ্তানি হয়।


সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ভারতে তেলবাহী ট্যাঙ্ক যাওয়া শুরু হওয়ার পর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এই শুল্ক স্টেশনকে পূর্ণাঙ্গ স্থল বন্দর করার বিষয়ে নড়েচড়ে বসে। এরই ধারাবাহিকতায় চাতলাপুর স্থল শুল্ক স্টেশনকে পূর্ণাঙ্গ স্থল বন্দর করার সম্ভাব্যতা যাছাই-বাছাই শুরু হয়। যে কারণে মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপণ কান্তি ঘোষ মঙ্গলবার চাতলাপুর চেকপোস্ট পরিদর্শন করেন।


কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহমুদুর রহমান খোন্দকার মৌলভীবাজার২৪ ডট কমকে জানান, সিনিয়র বাণিজ্য সচিব তপণ কান্তি ঘোষ মঙ্গলবার সকাল আনুমানিক সাড়ে ১০ টায় চাতলাপুর স্থল শুল্ক স্টেশন ও অভিবাসন কেন্দ্র এলাকায় পৌছান। তিনি সেখানে প্রায় ২ ঘন্টা অবস্থান করেন।


সিনিয়র বাণিজ্য সচিব চাতলাপুর স্থল শুল্ক স্টেশন ও অভিবাসন কেন্দ্রের বিদ্যমান পরিস্থিতি ও সার্বিক কার্যক্রম বিষয়ে খোঁজ খবর নেন এবং এটাকে একটি পূর্ণাঙ্গ স্থল বন্দর করার বিষয়ে কী কী করা যায় তা জেনে যান।


পরিদর্শনকালে মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোহাম্মদ জাহিদ আক্তার, সহকারী কমিশনার ভুমি মেহেদী হাসান, ১১ নং শরীফপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খলিলুর রহমানসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং শুল্ক ও অভিবাসন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ আপডেট: ৫ অক্টোবর ২০২২, ২২:১০
মুক্তিবাণী

পাঠকের মন্তব্য

ফেসবুকে

সর্বশেষ আপডেট

ভিডিও