জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৪

হঠাৎ আলোচনায় খালেদা জিয়া দেশে দ্রুত বদলাচ্ছে রাজনৈতিক দৃশ্যপট

মুক্তিবাণী অনলাইন ডেক্স :

বিদেশিদের চাপে কী সরকার নমনীয় হচ্ছে? আইনমন্ত্রীর বক্তব্য- আগামী দিনে দেশের রাজনীতির জন্য ‘সবুজ সংকেত’ নাকি ২০১৮ সালের মতো ফের পাতানো নির্বাচনে বিএনপিকে আনতে ‘নতুন ফাঁদ’ রাজনীতি কর

---

দেশে দ্রুত বদলাচ্ছে রাজনৈতিক দৃশ্যপট। নির্বাচনের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে ততই ‘সব দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের’ চাপ বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ উন্নয়ন সহযোগী প্রভাবশালী দেশগুলোর গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ধারবাহিক ঢাকা সফরে সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। ক্ষমতাসীন দল থেকে এতদিন ‘বিএনপি নেতাবিহীন দল, তারেক রহমান সাজাপ্রাপ্ত বিদেশে পলাতক, ক্ষমতায় গেলে প্রধানমন্ত্রী কে হবেন’ ইত্যাদি বক্তব্য দেয়া হতো। যুক্তরাষ্ট্রের ডোনাল্ড লু ঢাকা সফরের পর থেকে বিএনপিকে সভা-সমাবেশ করতে তেমন বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে না। এতদিন বলা হতো সাজাপ্রাপ্ত বেগম খালেদা জিয়ার সাজা ভোগ শেষ না হওয়া পর্যন্ত রাজনীতি করতে পারবেন না। যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের কাউন্সিলর ডেরেক শোলে ঢাকা সফরের পর হঠাৎ করে আইনমন্ত্রী বলছেন, বেগম খালেদা জিয়ার রাজনীতি করতে বাধা নেই। আইনমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের পর হঠাৎ করে বেগম খালেদা জিয়ার নাম আলোচনায় চলে আসে। গণমাধ্যম ছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে এ নিয়ে চলছে বিস্তর আলোচনা। কেউ বলছেন, বিদেশি চাপে সরকার বেগম জিয়াকে রাজনীতি করতে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। কেউ বলছেন, বেগম জিয়াকে আবার কারাগারে নেয়ার টার্গেট করে এমন বক্তব্য দিয়ে বেগম জিয়াকে বক্তব্য দিতে উৎসাহ দেয়া হচ্ছে। প্রশ্ন হচ্ছে হঠাৎ করে বেগম খালেদা জিয়ার নাম আলোচনায় আসছে কেন? সত্যিই সরকার কী বিদেশিদের চাপে নিরপেক্ষ নির্বাচনের ক্ষেত্র তৈরি করতে ‘বেগম জিয়ার রাজনীতিতে বাধা নেই’ বক্তব্য দিচ্ছে, নাকি এর নেপথ্যে অন্য কোনো ষড়যন্ত্র রয়েছে?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে নিরপেক্ষ নির্বাচনের চাপ বৃদ্ধির পর থেকে সরকারি দলের দায়িত্বশীলরা বলছেন, রাজপথের বিরোধীদলীয় নেতা বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রাজনীতি করতে কোনো বাধা নেই। কয়েক মাস ধরে সরকারের পক্ষ থেকে বার বার এ কথাই বলা হচ্ছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনারও গত ২১ ডিসেম্বর পরিষ্কার বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ না করলে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর একাধিক সদস্য গত কয়েক দিন ধরে বলছেন, নির্বাচনে না এলে বিএনপির অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ উন্নয়ন অংশীদার দেশগুলোর হাইভোল্টেজ কর্মকর্তাদের ধারাবাহিক ঢাকা সফর, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রীসহ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ-বৈঠক চলছেÑ তখনই বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রাজনীতিতে সক্রিয় হতে আইনগত কোনো বাধা নেইÑ মর্মে সবুজ সংকেত দেয়া হচ্ছে। এসব তৎপরতা থেকে উৎসুক, রাজনীতি-সচেতন মানুষের মধ্যে এ প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে যে, তাহলে কি বিএনপির কারাবন্দি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া রাজনীতিতে সক্রিয় হচ্ছেন?

এর আগে গত বছর ১০ ডিসেম্বর ঢাকার গোলাপবাগ মাঠে বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বলা চলে, ক্ষমতা হারানো এবং বিগত ১৪ বছরে মামলা-হামলায় পর্যুদস্ত বিএনপির রাজধানীতে এটিই ছিল সবচেয়ে বড় গণজমায়েত। ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশকে সামনে রেখে বিএনপির রাজনীতি নিয়ে নানামুখী গুঞ্জন পত্রে পল্লবিত হয়। বিশেষত মহানগর বিএনপি ঢাকা উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমানের একটি বক্তব্য ক্ষমতাসীন শিবিরকে নাড়িয়ে দেয়। তিনি বলেছিলেন, ১০ ডিসেম্বরের পর দেশ চলবে বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশে। এ ঘোষণায় জাতীয় রাজনীতিতে এক ধরনের সাসপেন্স তৈরি হয়েছিল। প্রশ্ন দেখা দিয়েছিলÑ আসলেই কি ঘটবে? বিভাগীয় সমাবেশ-পূর্ব দিনগুলোতে বিএনপির অহিংস আন্দোলন, সরকারের উস্কানিতে পা না দেয়া এবং বক্তব্য-বিবৃতিতে রেখেছে পরিপক্বতার স্বাক্ষর। পছন্দসই স্থানে (নয়া পল্টন) কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে না পারলেও সমাবেশ শেষ না হওয়া পর্যন্ত ছিল টান টান উত্তেজনা। তখন একটি কথা বাতাসে রটে যায়, তা হলো, সমাবেশস্থলে নাটকীয়ভাবেই হাজির হতে পারেন বেগম খালেদা জিয়া। কারণ, তখনও সরকারের দায়িত্বশীল মন্ত্রীরা বলে আসছিলেন, বেগম খালেদা জিয়ার রাজনীতিতে অংশ নিতে আইনগত কোনো বাধা নেই। কিন্তু সরকারের এই বক্তব্যকে ‘ফাঁদ’ মনে করেছিলেন সরকার-বিরোধী জোটের কেউ কেউ। কারণ, রাজনীতি করতে কোনো বাধা নেইÑ বলার পাশাপাশি আরেকটি কথাও উচ্চারিত হচ্ছিল সরকারের দায়িত্বশীলদের মুখে। তা হলো, বেগম খালেদা জিয়াকে পুনরায় কারাগারে নিক্ষেপের হুমকি। ফলে আশ্বাসের মধ্যেও ছিল সংশয়।

কিন্তু পানি দ্রুতই গড়াচ্ছে। দ্রুত বদলাচ্ছে রাজনৈতিক দৃশ্যপট। চলতি বছর ডিসেম্বরে নির্বাচনÑ গত ১০ ফেব্রুয়ারি এমন ঘোষণা দেন সরকারের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ওবায়দুল কাদের। অন্যদিকে বেড়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ উন্নয়ন অংশীদার দেশ ও সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ধারাবাহিক ঢাকা সফর।

যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের কাউন্সিলর ডেরেক শোলে এবং যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডি’র কর্মকর্তাসহ কয়েকজন হাইভোল্টেজ কূটনীতিক ঢাকা সফর করেন গত ১৪-১৫ ফেব্রুয়ারি। তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ডেরেক শোলে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্থনি ব্লিঙ্কেনের উপদেষ্টা। তার ঢাকা সফর সম্পর্কে ১৯ ফেব্রুয়ারি মার্কিন দূতাবাস বিবৃতি দেয়। তাতে বলা হয়, ঢাকা সফরকালে দুই কর্মকর্তা বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের অংশীদারিত্বের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেছেন। এতে বলা হয়, ১৪ ও ১৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সফরকালে কাউন্সিলর শোলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, নাগরিক সমাজ ও মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

গতকাল (২০ ফেব্রুয়ারি) সোমবার বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুয়েন লুই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গণভবনে সাক্ষাৎ করেন। এ সাক্ষাতকে ‘সৌজন্যমূলক’ বলা হলেও গুয়েন লুইয়ের দফতর প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, জলবায়ু-সম্পর্কিত বিপর্যয় এবং অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা মোকাবেলায় জাতিসংঘ ও বাংলাদেশের মধ্যে সহযোগিতামূলক সম্পর্কের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

বৈঠকগুলোতে কাউন্সিলর শোলে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় বাংলাদেশের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন অব্যাহত রাখার পাশাপাশি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং মানবাধিকার সুরক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরেন। জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমনে সহযোগিতা এবং একটি অবাধ ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক গড়ে তোলার ওপর জোর দেন।

ডেরেক শোলে যখন ঢাকায়, তখন একই দিন ঢাকায় অবস্থান করছিলেন ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা এবং দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের দূত এবং ভবিষ্যৎ কৌশলবিষয়ক সিনিয়র সচিব জাং সুং মিন। তারাও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এবং পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেন। তারা এসেছিলেন পূর্ববর্তী সফরকারীদের ধারাবাহিকতায়। গত ২০ জানুয়ারি ঢাকা সফর করে যান জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক বিশেষ র‌্যাপোর্টিয়ের ফেলিপ গঞ্জালেস। ১৪ জানুয়ারি আসে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া-বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। পাকিস্তানের ইমরান খান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পেছনে ডোনাল্ড লু কলকাঠি নাড়িয়েছেনÑ মর্মে অভিযোগ করেছিলেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ’র (পিটিআই) প্রধান ইমরান খান। এর আগে ৯ জানুয়ারি ঢাকায় আকস্মিকভাবেই পা রাখেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শিন গ্যাং। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠকের মতো ‘আসল কাজ’টি তিনি সেরে নিয়েছেন ঢাকায় ৫২ মিনিটের যাত্রাবিরতিতেই। ওবায়দুল কাদেরের কথা শেষ অবধি ঠিক থাকলে এখন চলছে নির্বাচনের বছর। ডিসেম্বর হতে বাকি মাত্র ৯ মাস। এ সময়টিতে বাংলাদেশের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও নির্বাচন নিয়ে উন্নয়ন অংশীদারদের আগ্রহী হয়ে ওঠার যৌক্তিক কারণ রয়েছে। এটি শুধু বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটেই নয়। এশিয়ায় চীন নেতৃত্বাধীন এবং মার্কিন নেতৃত্বাধীন প্রভাব বলয়কে শক্তিশালী করা, কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা ও কর্তৃত্ব ধরে রাখার প্রশ্নে বাংলাদেশ ভূখণ্ড পরাশক্তিদ্বয়ের জন্যই জরুরি। এ কারণে বাংলাদেশ হয়ে উঠেছে দক্ষিণ এশিয়ায় ভূরাজনীতির অংশ। বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার উভয় পরাশক্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ফলে আগামী জাতীয় নির্বাচন নিছক অভ্যন্তরীণ ক্ষমতার পালাবদল নয়। এ কারণে আগামী নির্বাচন অংশীদারিত্বমূলক, অবাধ, গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে ক্ষমতাসীনদের প্রতি চাপ রয়েছে। পক্ষান্তরে প্রায় দুই দশক ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির ‘১০ দফা আন্দোলন’ পিরামিড শৃঙ্গের মতো ক্রমেই এগিয়ে চলেছে ‘১ দফা’র দিকে। তাহলো ‘বর্তমান সরকারের অধীন কোনো নির্বাচন নয়।’ ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের মতো অন্যদিকে ধাবিত করার মতো কোনো নিশানা এখনও দৃশ্যমান নয়। এ বাস্তবতায় বর্তমান সরকারের অধীনে বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে ১০ দফার বাদবাকি দফাগুলো মেনে নেয়ার কৌশল নিতে পারে সরকার। এই বিশ্লেষণে বিএনপির কারাবন্দি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনীতিতে ‘সক্রিয়’ দেখানোর প্রয়াসও হতে পারে আইনমন্ত্রীর সাম্প্রতিক বক্তব্য।

বেগম খালেদা জিয়ার রাজনীতি করতে কোনো বাধা নেইÑ আক্ষরিত অর্থেই সরকার এ কথা বলছে কি নাÑ গতকাল সোমবার জানতে চাওয়া হয় আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হকের কাছে। প্রশ্ন করা হয়, বেগম খালেদা জিয়ার রাজনীতি করতে কোনো বাধা নেই। এটি দিয়ে কি আসলে আপনারা (সরকার) বোঝাচ্ছেন যে, বেগম খালেদা জিয়া রাজনীতি করুন। সভা-সমাবেশে যান। বক্তৃতা-বিবৃতি দিন?

আইনমন্ত্রী জবাবে এই প্রতিবেদকে বলেন, আমি কোনো কিছুই বোঝাতে চাইনি (আই অ্যাম নট মিনিং অ্যানিথিং, হোয়াট আই অ্যাম ট্রাইং টু সে)। যা আমি বলতে চেয়েছি তা হলো, সরকার কি সিদ্ধান্ত দিয়েছে। যে কাগজটি, যে চিঠিটি দেয়া হয়েছে। সরকার তাকে (বেগম খালেদা জিয়াকে) যে চিঠিটি দিয়েছে। ৪০১ ধারায় তার সাজা স্থগিত হয়েছে। যে ২টি শর্তে তাকে মুক্তি দেয়া হয়েছে, সেই ডকুমেন্টে যা আছে আমি তা-ই বলেছি।

‘বেগম খালেদা জিয়া বক্তৃতা-বিবৃতি দিলে তো শর্ত ভঙ্গ হয়…।’ এ প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী বলেন, একটি জিনিস মনে রাখতে হবে। যিনি, যারা এই চিঠিটি লিখেছেন সরকারের কাছে তাকে মুক্তি দেয়ার জন্য। তারা লিখেছেন কি? তারা লিখেছিলেন, তিনি (বেগম খালেদা জিয়া) অত্যন্ত অসুস্থ। ইমিডিয়েটলি তার সুচিকিৎসা দরকার। এবং তার জীবন বিপন্ন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা মানবতা দেখিয়ে এই চিঠির ওপর যখন অ্যাকশন নিতে বললেন, তিনি ৪০১ ধারায় তাকে দু’টি শর্ত সাপেক্ষে সাজা স্থগিত করে মুক্তি দেয়ার ব্যাপারে সাব্যস্ত করলেন। দু’টি শর্ত কি? একটি হচ্ছে, তিনি বাংলাদেশে থেকে চিকিৎসা নেবেন। এবং বিদেশে যেতে পারবেন না। এইতো শর্ত। এখন কথা হচ্ছে, রাজনীতি করতে পারবেন নাÑ এমন শর্ততো চিঠির মধ্যে নেই। আমিতো বলতে পারব না যে আছে। কিন্তু পাশাপাশি এটিও বিবেচনা করতে হবে, যিনি এত অসুস্থ, তিনি কি রাজনীতি করতে পারেন? পারেন না। এটিই স্বাভাবিক। তাহলে তো শর্ত দেয়া আছে। সরকার এরকম কোনো শর্ত আরোপ করেনি। সেটি সঠিক। কিন্তু এ অবস্থায় তিনি যদি রাজনীতি করেন, তাহলে এটিই প্রমাণিত হবে যে, ওই চিঠিতে যা লেখা হয়েছিল সেটি মিথ্যা। এই তো কথা।

‘এখানে তো আরেকটি বিষয়ও ভাবা যেতে পারে যে, কোনো মহল বা কোনো দিকের ইঙ্গিতে আপনারা বেগম খারেদা জিয়াকে রাজনীতিতে স্বাগত জানাচ্ছেন কি না’। এ প্রসঙ্গে আনিসুল হক বলেন, দেখুন আমি বার বার একটি কথা বলছি। আমাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে একটি ডকুমেন্টের ব্যাপারে। আমি কারো ইঙ্গিত, আকারে কথা বলিনি।

এদিকে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও সাবেক এমপি ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা এই প্রতিবেদককে বলেন, আওয়ামী লীগ মিথ্যার ওপর বসে আছে। তাদের বিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই। তাদের একজন এমপি পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়া নাকি মুচলেকা দিয়ে বাসায় আছেন। সেই আওয়ামী লীগ এখন ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে বলছেন, বেগম খালেদা জিয়া নাকি রাজনীতি করতে পারবেন। কেন তারা এখন এমনটি বলছেন আমরা জানি না। আর যা-ই হোক আওয়ামী লীগকে বিশ্বাস করা যায় না।

সুত্র : ইনকিলাব

সর্বশেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, ০২:০৮
মুক্তিবাণী

পাঠকের মন্তব্য

ফেসবুকে

সর্বশেষ আপডেট

ভিডিও