সোমবার (২৮ জুলাই) সকাল ৯টায় মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে অক্সিজেন লিকেজের ঘটনায় ধোঁয়ায় অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে যায়। এতে ওয়ার্ডে থাকা রোগী ও স্বজনদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের দ্রুত হস্তক্ষেপে লিকেজ মেরামত করা হয় এবং বড় ধরনের দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব হয়।
বিস্তারিত বিবরণ:
১. ঘটনার ধারা:
- সকাল ৯টার দিকে গাইনি ওয়ার্ডে অক্সিজেন সরবরাহ লাইনে লিকেজ সৃষ্টি হয়।
- ধোঁয়া ছড়িয়ে পুরো ওয়ার্ড অন্ধকারে ঢেকে গেলে রোগীরা চিৎকার ও হাহাকার শুরু করেন।
- ফায়ার সার্ভিসের টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে লিকেজযুক্ত অংশ মেরামত করে ওয়ার্ডের পরিবেশ স্বাভাবিক করে ।
২. আক্রান্তদের বক্তব্য:
- এক রোগী জানান, “ধোঁয়া ও গন্ধে শ্বাস নেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছিল। ফায়ার সার্ভিস না এলে বিষ্ফোরণ হতে পারত!”
- অন্য স্বজনরা অভিযোগ করেন, হাসপাতালে নিরাপত্তা ব্যবস্থা দুর্বল বলে বারবার এমন ঘটনা ঘটে।
৩. কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া:
- ডা. প্রনয় কান্তি দাশ (তত্ত্বাবধায়ক) নিশ্চিত করেন, “লিকেজের খবর পেয়েই ফায়ার সার্ভিসকে ডাকা হয়। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নগণ্য, এখন সব স্বাভাবিক।”
- সাইফুল ইসলাম (ফায়ার ফাইটার) বলেন, “লিকেজের উৎস একটি ভাঙা ভাল্ব ছিল, যা অবিলম্বে বদলে দেওয়া হয়েছে” ।
৪. হাসপাতালের অক্সিজেন ব্যবস্থার পটভূমি:
- গত বছর বিশ্বব্যাংক ও ইউনিসেফের অর্থায়নে হাসপাতালে ১১,০০০ লিটার ক্ষমতার অক্সিজেন প্ল্যান্ট স্থাপনের কাজ শুরু হয়, যা এখনও চূড়ান্ত হয়নি ।
- এর আগে ২০২১ সালে প্রতিষ্ঠানটি ২৭০টি অক্সিজেন সিলিন্ডার পেয়েছিল, কিন্তু স্থায়ী পাইপলাইন না থাকায় সিলিন্ডার-নির্ভর ব্যবস্থায় ঝুঁকি থেকেই যায় ।
প্রভাব ও ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ:
- তদন্ত কমিটি গঠন: হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ লিকেজের কারণ খতিয়ে দেখতে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে।
- অক্সিজেন প্ল্যান্টের কাজ ত্বরান্বিতকরণ: জেলা প্রশাসন ইউনিসেফের সাথে সমন্বয় করে প্ল্যান্টের বাকি কাজ আগস্টের মধ্যে শেষ করার ঘোষণা দিয়েছে ।
- নিরাপত্তা অডিট: সব ওয়ার্ডে অক্সিজেন লাইনের নিয়মিত চেকআপের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শেষ প্যারা: এই ঘটনায় হাসপাতালের *অবকাঠামোগত দুর্বলতা* আবারও উন্মোচিত হয়েছে। যদিও ফায়ার সার্ভিসের দ্রুত সাড়া দুর্ঘটনা রোধ করলেও, স্থায়ী অক্সিজেন প্ল্যান্ট চালু না হওয়া পর্যন্ত রোগীদের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। কর্তৃপক্ষের এখনই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা জোরদার করা প্রয়োজন—যেখানে প্রতিটি শয্যার পাশে অক্সিজেন সরবরাহের স্বপ্ন এখনও অপেক্ষারত ।
পাঠকের মন্তব্য