মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের ইতিহাসে উন্নয়নের স্বপ্ন বারবার ধ্বংস হয়েছে গোষ্ঠীগত স্বার্থ, লবিং এবং নেতৃত্বের দ্বন্দ্বের কারণে। কিংবদন্তি সাংবাদিক ও উন্নয়ন রূপকার মরহুম এম সাইফুর রহমানের বহুতল ভবন নির্মাণের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছিল গুটিকয়েক মানুষের ষড়যন্ত্রে। তাঁর পরিকল্পনা বাস্তবায়িত না হওয়ায় তিনি অন্য জেলায় চলে যান, কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়—কে বা কারা ছিলেন সেই সময়কার সাংবাদিক সংগঠনের উন্নয়ন বাধাগ্রস্তকারী?
অর্থ বরাদ্দ ও ফেরত যাওয়ার রহস্য জেলা পরিষদ থেকে প্রেসক্লাবের জন্য বরাদ্দকৃত ২৫ লাখ টাকা ফেরত চলে যায়। এই টাকা কোথায় গেল? কী ছিল এর পেছনের গল্প? সাবেক এমপি এম নাসের রহমান ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেও কিছু অসাধু চক্র তা উপড়ে ফেলে, যা প্রমাণ করে উন্নয়নের পথে কতটা শক্তিশালী ছিল বিরোধী শক্তি।
প্রেসক্লাবের সম্মুখে বিশাল ঘড়ি নির্মাণ করে সংগঠনটিকে অন্ধকারে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল। এর পেছনে কার স্বার্থ কাজ করেছিল? স্থানীয় সাংবাদিকদের মতে, এটি ছিল একটি সুপরিকল্পিত চক্রান্ত, যার মাধ্যমে প্রেসক্লাবকে দুর্বল ও নিষ্ক্রিয় রাখার চেষ্টা করা হয়েছিল।
যাদের অবদান ভুলে যায় নি ইতিহাস মৌলভীবাজার পৌরসভার তৎকালীন চেয়ারম্যান মরহুম সাজ্জাদুর রহমান পুতুল প্রেসক্লাবের জমি প্রদানে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন। এছাড়াও, প্রেসক্লাবের পুরাতন ভবন নির্মাণে প্রবীণ ও প্রয়াত সিনিয়র সাংবাদিকদের অবদান অনস্বীকার্য। কিন্তু আজ তাদের স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়েছে কিছু মানুষের সংকীর্ণ মানসিকতায়।
এখন সময় এসেছে সেই সব ব্যক্তি ও গোষ্ঠীকে চিহ্নিত করার, যারা প্রেসক্লাবের উন্নয়নকে বারবার বাধাগ্রস্ত করেছে। সাংবাদিক সমাজের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস ছাড়া এই অন্ধকার জয় করা সম্ভব নয়। মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবকে আবারও জাগ্রত করতে হলে অতীতের ভুলগুলো চিহ্নিত করে ভবিষ্যৎ গড়তে হবে।
মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব শুধু একটি ভবন নয়, এটি সাংবাদিকতার স্বাধীনতা ও সম্মানের প্রতীক। এর উন্নয়ন বন্ধ করা মানে সাংবাদিকতার কণ্ঠস্বরকে স্তব্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা। এখনই সময় এই অধ্যায়ের অবসান ঘটিয়ে নতুন করে স্বপ্ন দেখার।
সর্বশেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০২৫, ১২:০৯
পাঠকের মন্তব্য