“প্রধান শিক্ষকের ‘গাছ’ কাণ্ড! সড়কের ৪০ গাছ কেটে বিক্রি, ফটিকছড়িতে তোলপাড়”

ছবি মুক্তিবাণী
ছবি মুক্তিবাণী
ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

ভুজপুর থানার নারায়ণহাট এলাকায় সরকারি সড়কের প্রায় ৪০টি ইউক্যালিপ্টাস ও আকাশমণি গাছ কেটে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত মোঃ হারুনুর রশীদ (নারায়ণহাট পশ্চিম ইদুলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক) গত ৪ ও ৫ জুলাই দুপুরে গহিরা-হেয়াকো সড়কের হালদা ভ্যালী চা-বাগান সংযোগ সড়কের পাশের গাছগুলো কাটেন। পরে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে ছয় ভাই-বোনের মধ্যে ভাগ করে নেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।  

ছবি মুক্তিবাণী

অভিযুক্তের বক্তব্য: হারুনুর রশীদ তার সওয়ালে জানান, “সড়কসংলগ্ন জমি আমার পৈত্রিক সম্পত্তি। পরিবারই গাছ রোপণ করেছিলেন। আশেপাশের অনেকে অনুমতি ছাড়াই গাছ কেটেছেন। আমি বন বিভাগকে মৌখিকভাবে জানালেও লিখিত অনুমতির প্রয়োজনীয়তা বুঝতে ভুল করেছি।” তবে তার এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে স্থানীয় বন বিভাগ। নারায়ণহাট রেঞ্জ কর্মকর্তা খান মোঃ আবারারু রহমানের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি, তবে বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, “এমন কোনো অনুমতি দেওয়া হয়নি।”  

স্থানীয় প্রতিক্রিয়া ও আইনগত প্রেক্ষাপট: এ ঘটনায় নারায়ণহাটে ক্ষোভ ছড়িয়েছে। এক বাসিন্দা বলেন, “সরকারি সড়কের গাছ ব্যক্তিগত সম্পত্তি হতে পারে না। এটি সম্পূর্ণ অবৈধ ও লোভপ্রসূত কাজ।” নারায়ণহাট ইউপি সদস্য মোঃ নাছির উদ্দীন জোর দিয়ে বলেন, “গাছ কাটতে বন বিভাগের অনুমতি বাধ্যতামূলক। একজন শিক্ষকের এমন কাজ অগ্রহণযোগ্য।”  

কর্তৃপক্ষের অবস্থান: • উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) হাসান মুরাদ চৌধুরী: “একজন শিক্ষক হয়ে এমন গর্হিত কাজ করা উচিত হয়নি। বিষয়টি তদন্ত করা হবে।” 

উপজেলা প্রকৌশলী তন্নয় নাথ: “সরকারি সড়কের গাছ ব্যক্তিগতভাবে কাটার কোনো বিধি নেই। বন বিভাগের ছাড়পত্র ছাড়া গাছ কাটা দণ্ডনীয় অপরাধ। নারায়ণহাটে কাটা গাছ পরিদর্শন করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

• উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ মোজাম্মেল হক চৌধুরী: “ঘটনাটি আমাদের গোচরে আনা হয়েছে। তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”  

পটভূমি: গত দুই দশক ধরে হালদা ভ্যালী সংযোগ সড়কটি সবুজায়নের জন্য পরিচিত ছিল। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, প্রধান শিক্ষক দিনদুপুরে গাছ কেটে পরিবেশের ক্ষতি করার পাশাপাশি সরকারি সম্পদ বেহাত করেছেন।

মুক্তিবাণী

পাঠকের মন্তব্য

ফেসবুকে

সর্বশেষ আপডেট

ভিডিও