জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৪

জনগণের মালিকানা এবং ভোটের অধিকার সমুন্নত রাখতে আন্দোলন সংগ্রামের বিকল্প নেই

মুক্তিবাণী অনলাইন ডেক্স :

অতীতের যে কোনো সরকার এবং অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় এখন বিভিন্ন সেক্টরে লুটপাট বেড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক সাবেক শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া। তিনি বলেছেন, আমাদের দেশে বর্তমানে লুটেরা ধনিক শ্রেণির লোকেরা ক্ষমতার ছত্রছায়ায় একত্রিত হয়েছে। আগের তুলনায় দুর্নীতি ব্যাপকভাবে বেড়েছে, সামনে আরো বাড়বে। জনগণের মালিকানা এবং ভোটের অধিকার পেতে চাইলে এই রাজনৈতিক ব্যবস্থায় হবে না। যে রাজনৈতিক সিস্টেম জনগণের মালিকানাকে সমুন্নত রাখবে, তার জন্য আন্দোলন সংগ্রাম ছাড়া বিকল্প কিছু নেই। গতকাল শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) আয়োজিত জ্বালানি বিষয়ক এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।

সাবেক শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া বলেন, আমি শিল্পমন্ত্রী থাকাকালীন দেখেছি কীভাবে কর্ণফুলী সার কারখানায় স্থানীয় দামে গ্যাস সরবরাহ করে আন্তর্জাতিক দামে সার কিনতে হতো। যখন গ্যাস সরবরাহ কম থাকতো, তখন আমাদের অন্য কারখানাগুলো বন্ধ করে রেখেও তাদের গ্যাস দিতে হতো। যখন আমরা গ্যাস আমদানি করি, তখনো প্রথম কর্ণফুলীকে সাপ্লাই দিতে হতো, বেশি দামে আমদানি করেও স্থানীয় দামে তাদের গ্যাস দিতে হতো। শিল্পপতিরা বলতেন, আমাদের ফার্টিলাইজার কারখানার দরকার নেই। এগুলো বন্ধ করে রেখে বিদেশ থেকে ইমপোর্ট করলেই তো পারেন। কিন্তু বিদেশ থেকে ইমপোর্ট করলে যে কস্ট ইফেক্টিভ হবে না, কৃষকদের ওপর চাপ পড়বে, সেটা তাদের কাছে বিচার্য নয়, বিচার্য হচ্ছে তার কমিশন। এই নিয়ে আমাদের কিছু সার কারখানা বন্ধও রাখা হয়েছিল, কিছু ঝগড়া বিবাদও হয়েছে।

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের এই নেতা বলেন, বঙ্গবন্ধু সরকার শতভাগ জনগণের মালিকানায় শেল কোম্পানিগুলোকে জাতীয়করণ করেছিলেন। তার পরবর্তীতে অনেক কিছু হয়েছে। আমাদের ১৪ দলীয় জোটে যখন আমরা ২৩ দফা ঘোষণা করি তখন জাতীয় সম্পদ কীভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে, সমুদ্রের তেল-গ্যাসের কী হবে, এ বিষয়গুলো উল্লেখ ছিল। এই সরকার বঙ্গবন্ধুর নীতিকথাই বলেন, এসব নীতিকথা বলে আজকে গ্যাস ও জ্বালানির ক্ষেত্রে টোটালি বঙ্গবন্ধুর চিন্তা চেতনার পরিপন্থী কাজটা করছে। প্রথমত, যে হারে বিদ্যুৎকেন্দ্র হয়েছে; বাইরে থেকে লোক ধরে এনে, যাদের কোনো অভিজ্ঞতা আছে কি নেই দেখা হলো না-তাকে বিদ্যুৎকেন্দ্র দিয়ে দেয়া হলো এবং সেগুলো বোঝায় পরিণত হলো। সরকারের পলিসিমেকাররা অ্যাডহক ভিত্তিতে চিন্তা করেছে। তারা চিন্তা করেনি ওই বিদ্যুৎকেন্দ্রের গ্যাস যদি না আসে, ডিজেল যদি না আসে তাহলে কী হবে।

প্রখ্যাত বাম নেতা দিলীপ বড়ুয়া বলেন, কারণ বিদ্যুৎ সেক্টরে যারা কাজ পাচ্ছেন তারা চাচ্ছে রাতারাতি ধনী হয়ে যেতে। আমাদের দেশেও কেউ কেউ রাতারাতি ধনী হয়ে গেছে জ্বালানি বিক্রির টাকায়। কেউ সিঙ্গাপুরে গিয়ে তাদের হেড অফিস করে ফেলেছে, এভাবে লুটপাট হচ্ছে। কিন্তু আমরাও ( ১৪ দলীয় জোট) তো সৎ হতে পারিনি। আমরা তো লুটপাটটাকে আরো এক্সিলারেট করেছি (গতি বাড়িয়ে দিয়েছি)। এসব লুটপাটের ভার জনগণকে বহন করতে হচ্ছে। এভাবে তো জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সুরক্ষা করা যাবে না। এই রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা দুর্নীতিগ্রস্ত, লুটেরা ধনিক শ্রেণি সৃষ্টি করে। আগে বলা হতো সরকারি ব্যাংকগুলোতে সরকারের মদতে চুরি হতো, এখন তো প্রাইভেট ব্যাংকগুলোতে পুকুর চুরি হচ্ছে। ইসলামী ব্যাংকে কী হচ্ছে? অন্য ব্যাংকগুলোতে কী হচ্ছে? এর দায় এড়াবেন কিভাবে?

সর্বশেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০৬
মুক্তিবাণী

পাঠকের মন্তব্য

ফেসবুকে

সর্বশেষ আপডেট

ভিডিও