স্বাস্থ্যমন্ত্রী অবৈধ ক্লিনিক বন্ধে ডিসিদের সহযোগিতা চাইলেন !

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি
মুক্তিবাণী অনলাইন ডেক্স :

জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের অভিযান পরিচালনায় জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) সহযোগিতা চেয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন।

রোববার বিকেলে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক সম্মেলন-২০২৪ এর প্রথম দিনের দ্বিতীয় অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। দেশের অবৈধ ক্লিনিক নিয়ে কোনো নির্দেশনা দিয়েছেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে অনেক কথা হয়েছে। তারা বলেছেন তাদের অনেক স্থানে জনবল নেই। হাসপাতালে বেডের থেকে রোগীর সংখ্যা বেশি, সেই অনুপাতে অর্থ বরাদ্দ নেই। এসব কথা আমি শুনেছি ও বলেছি, চেষ্টা করবো সমস্যাগুলো সমাধানের। তিনি বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে একটা কথাই বলা হয়েছে। সেটা হলো আমরা সম্প্রতি একটি অভিযান শুরু করেছি অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনিস্টিক সেন্টার বন্ধে। আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর থেকে অভিযানে যে টিম যাবে তাদের যেন সর্বাত্মক সহায়তা করে। কারণ মন্ত্রণালয়ের তো জুডিসিয়াল ক্ষমতা নেই। সেটা ডিসিদের রয়েছে। এই অভিযান যাতে সুষ্ঠুভাবে হয়, কোনো ধরনের প্রতারণা না হয় এবং এ কাজে কোনো ধরনের বাধা এলে আমাদের অবহিত করে। এটাই ছিল তাদের কাছে মূল বিষয়, যাতে সারাবছর সুষ্ঠুভাবে অভিযান পরিচালনা করতে পারি। জনবল সংকটের কোনো সুনির্দিষ্ট কোনো প্রস্তাব ছিল কি না এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, জনবল আমরা নিয়োগ করছি। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় স্বাস্থ্যখাতে জনবল নিয়োগের বিষয়টি নিদিষ্ট করে দিয়েছেন সেই অনুযায়ী জনবল পদায়ন ও পদোন্নতি কত দিন সময় লাগতে পারে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন,একবারেতো সবকিছু সম্ভব না, পর্যায়ক্রমে করা হবে। এজন্য সময় লাগবে। পর্যায়ক্রমে আমরা আস্তে আস্তে সব হাসপাতালে করবো। হাসপাতালে বেডের থেকে রোগীর সংখ্যা বেশির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এতে হাসপাতালে সেবা ব্যাহত হচ্ছে, চিকিৎসকরা হিমশিম খাচ্ছে এত রোগী নিয়ে। আমরা পর্যায়ক্রমে আস্তে আস্তে সমাধানের দিকে এগিয়ে যাবো। হাসপাতালে চিকিৎসক থাকে না এ বিষয়ে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা বলেন, অনেক সময় চিকিৎসক থাকে না, ঠিক আছে। তবে হাসপাতালে বেডে ও মেঝেতে যেসব রোগী থাকে তাদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়। তারা যে সার্ভিসটা দিচ্ছে সেটাও বলতে হবে। এতে তারা উৎসাহিত হয়। চিকিৎসাসেবায় গাফিলতি করলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। চ্যালেঞ্জ নিয়েই কাজ করতে হয়। আমি চেষ্টা করবো দেশের জনগণকে গুণগত মানসম্মত চিকিৎসাসেবা দিতে পারি। আমরা সম্মিলিতভাবে কাজ করবো। এর আগে সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে চার দিনের জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলন-২০২৪ এর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সম্পর্কিত কার্য-অধিবেশনে আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানিযোগ্য পণ্য বহুমুখীকরণ, চামড়াজাত শিল্পের উন্নয়ন ও চামড়া রপ্তানির বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া, রমজান মাস সামনে রেখে তেল, চিনি ও চালের দাম নিয়ন্ত্রণ, প্রকল্প বাস্তবায়নে ভূমি অধিগ্রহণের বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তি করা এবং সার্বজনীন পেনশন স্কিম বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে।

এবারের সম্মেলনের আলোচ্যসূচিতে থাকছে ৩৫৬ প্রস্তাব। প্রস্তাবগুলোর জনসেবা বৃদ্ধি, জনদুর্ভোগ কমানো, রাস্তাঘাট ও ব্রিজ নির্মাণ, পর্যটনের বিকাশ, আইনকানুন বা বিধিমালা সংশোধন, জনস্বার্থ সংরক্ষণের বিষয়গুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করা হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ২২টি প্রস্তাব পড়েছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ থেকে। সম্মেলনে সর্বমোট অধিবেশন ৩০টি। এর মধ্যে কার্য-অধিবেশন ২৫টি (১টি উদ্বোধন অনুষ্ঠান, ১টি স্পিকারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ এবং মতবিনিময় এবং ১টি প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ এবং সদয় নির্দেশনা গ্রহণ এবং অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা ২টি। এছাড়া অংশগ্রহণকারী কার্যালয়: ১টি (প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়)। এবারের ডিসি সম্মেলনে প্রথমবারের মতো সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিবরা বিভাগীয় কমিশনার ও ডিসিদের কাছে তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরবেন ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেবেন। এজন্য সম্মেলনের প্রথম দিন গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ‘উন্নয়নে মাঠ প্রশাসন’ শীর্ষক এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।সভায় সভাপতিত্ব করবেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিবরা।

মুক্তিবাণী

পাঠকের মন্তব্য

ফেসবুকে

সর্বশেষ আপডেট

ভিডিও