জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৪

আরও ২ কোটি টাকা সেই আ.লীগ নেতার বন্ধুর বাসায়

কোটি টাকা, আ.লীগ নেতা, এনামুল হক ওরফে এনু
কোটি টাকা, আ.লীগ নেতা, এনামুল হক ওরফে এনু

রাজধানীর নারিন্দায় গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এনামুল হকের বন্ধুর বাসায় মঙ্গলবার তৃতীয় অভিযান পরিচালনা করেছে র‌্যাব। এ সময় ওই বাসা থেকে নগদ দুই কোটি টাকা উদ্ধার করা হয়।

এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এনামুল হকের কর্মচারী আবুল কালাম আজাদের বাসায়ও অভিযান চালায় র‌্যাব। সেখানে থাকা একটি ভল্ট থেকে এক হাজার টাকার অনেকগুলো বান্ডিল পাওয়া যায়। তাতে প্রায় দুই কোটি টাকা রয়েছে বলে জানায় র‌্যাব। এছাড়া ওই বাসা থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্রও জব্দ করা হয়।

সোমবার মধ্যরাতের পর গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এনামুল হক ও সাধারণ সম্পাদক রূপন ভূঁইয়ার বাসা ঘিরে ফেলে র‌্যাব। মঙ্গলবার সকাল থেকে বাসা দুটিতে অভিযান চালিয়ে তিনটি ভল্টের সন্ধান পাওয়া যায়। পরে সেখান থেকে এক কোটি পাঁচ লাখ টাকা ও আট কেজি (৭২০ ভরি) স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়। এছাড়া পাঁচটি আগ্নেয়াস্ত্রও জব্দ করা হয়।

তৃতীয় অভিযান নিয়ে এক ব্রিফিংয়ে র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল শাফিউল্লাহ বুলবুল বলেন, তৃতীয় অভিযানের অংশ হিসেবে আমরা নারিন্দার শরৎগুপ্ত রোডের ২২/১ নম্বর বাড়িতে অভিযান চালাই। তিনতলা ভবনের দ্বিতীয় তলায় থাকতেন আওয়ামী লীগ নেতা এনামুল হকের বন্ধু হারুন অর রশিদ। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা জানতে পারি সেখানেও একটি ভল্ট আছে। ভল্টে অবৈধ টাকা রাখা আছে।
তিনি বলেন, হারুনের বাসায় প্রবেশ করে আমরা দেখতে পাই, খাট ও ওয়ারড্রবের মাঝামাঝি একটি সিন্দুক। সেখান থেকে প্রায় দুই কোটি টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।

‘এ সময় এনামুলের বন্ধু হারুন বাসায় ছিলেন না। সে স্থানীয় ট্রাকস্ট্যাডের কর্মচারী। হারুনের স্ত্রী জানান, তারা এ অর্থের বিষয়ে কিছুই জানেন না। কয়েক দিন আগে এনামুল এসে টাকাগুলো বাসায় রেখে যান।’

শাফিউল্লাহ বুলবুল বলেন, ‘আজ (মঙ্গলবার) পরিচালিত তিনটি অভিযানে মোট পাঁচ কোটি পাঁচ লাখ টাকা জব্দ করা হয়েছে। আমাদের ধারণা, টাকাগুলো অবৈধ ক্যাসিনোর সঙ্গে সম্পৃক্ত।’

তিনি আরও বলেন, প্রথম অভিযানে আমরা পাঁচটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করি। দ্বিতীয় অভিযানে একটি আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়।

মঙ্গলবার দুপুরে দ্বিতীয় অভিযান শেষে এক ব্রিফিংয়ে র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল শাফিউল্লাহ বুলবুল বলেন, গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এনামুল হক ও সাধারণ সম্পাদক রূপন ভূঁইয়া ক্যাসিনোর লাভের টাকা বাসায় নিয়ে রাখতেন। টাকা রাখলে বেশি জায়গা লাগে তাই তারা স্বর্ণ কিনে সেগুলো ভল্টে রাখতেন। এছাড়া তাদের বাসা থেকে পাঁচটি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য ছিল, কয়েক দিন আগে এখানকার ইংলিশ রোডে পাঁচটি ভল্ট বানানোর অর্ডার দেন এনামুল হক ও রূপন ভূঁইয়া। সেই সূত্রে জানতে পারি তাদের বাসায় তিনটা ভল্ট আছে।

তিনি বলেন, আমাদের কাছে আরও তথ্য ছিল, এনামুল হক ওরফে এনু ও রূপন ভূঁইয়া ক্যাসিনোর শেয়ারহোল্ডার। ক্যাসিনোর লাভের টাকা তারা বাসায় নিয়ে রাখতেন। নগদ টাকা রাখলে অনেক জায়গার প্রয়োজন হয় তাই তারা টাকা দিয়ে স্বর্ণ কিনে রাখতেন।

উল্লেখ্য, রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অবৈধ ক্যাসিনোতে অভিযান চালাচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তারই ধারাবাহিকতায় সোমবার ফু-ওয়াং, পিয়াসী ও ড্রাগন বারে অভিযান চালায় পুলিশ। অভিযানে অবৈধ কিছু পায়নি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। অথচ এর আগে পরিচালিত অভিযানে অবৈধ মাদক, ক্যাসিনো সরঞ্জাম, এমনকি অবৈধ অস্ত্রও উদ্ধার করা হয়।

সর্বশেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৭:৪৭
মুক্তিবাণী

পাঠকের মন্তব্য

ফেসবুকে

সর্বশেষ আপডেট

ভিডিও