জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৪

নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তোড়জোড় কোন দিকে যাচ্ছে দেশ?

ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত
মুক্তিবাণী অনলাইন ডেক্স :

‘উদ্ভট উটের পিঠে চলেছে স্বদেশ’ (শামসুর রাহমান)। কবির এই কবিতার মতোই ঘটছে নানা ‘উদ্ভট’ ঘটনা। নির্বাচনের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বি বিএনপির অফিসে ঝুলছে তালা। দলটির হাজার হাজার নেতাকর্মী কারাগারে। এর মধ্যেই ২০১৪ সালে কাজী রকিবুদ্দিন আহমদের মতো সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের ঢোল বাজাতে শুরু করেছে। এতে করে রাজনৈতিক সংঘাত-সংঘর্ষ, রক্তারক্তির আশঙ্কায় জনমতে উদ্বেগ-উৎকন্ঠা দেখা দিয়েছে। ব্যবসায়ীদের মধ্যে ভীতি-আতঙ্ক শুরু হয়েছে।

জনগণের ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠায় নিদর্লীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে লাগাতার অবরোধ চলছে। বিএনপির ডাকা এই অবরোধে স্থবির হয়ে পড়েছে জীবনযাত্রা। ডলার সংকটে রফতানি বাণিজ্যের বেহাল অবস্থা। সামগ্রিক অর্থনীতি ভঙ্গুর অবস্থায় নিপতিত। দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বাইরে। যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক মহল সংলাপ করে চলমান সংকট সুরাহার আহ্বান জানাচ্ছেন। গতকালও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মোহাম্মদ তোফাজ্জাল হোসেন মিয়ার সঙ্গে দেখা করে নির্বাচনের পরিস্থিতি জানতে চেয়েছে। ১৩ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু চিঠি দিয়ে তিন দলকে ত্রি-দলীয় সংলাপের আহ্বান জানিয়েছেন। এর আগেই অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন না হলে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ‘ভিসানীতি’সহ কঠোর পদক্ষেপ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ প্রভাবশালী দেশগুলো কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের বার্তা দিয়েছে। এ অবস্থায় সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নির্বাচন কমিশন আরেকটি পাতানো নির্বাচনের আয়োজন করতে তোড়জোড় শুরু করেছে। আজ বুধবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল নিয়ে বৈঠক ডেকেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনের সচিব জাহাংগীর আলম জানিয়েছেন, কখন, কীভাবে তফসিল ঘোষণা হবে, তা বুধবার সকাল ১০ টায় সাংবাদিকদের জানানো হবে। নির্বাচন হতে পারে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে।

ইসি সুত্র জানিয়েছে, কমিশনের বৈঠকের পর জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে তফসিল ঘোষণা করতে পারেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। ক্ষমতাসীন দলের দায়িত্বশীল নেতারা দলের নেতাকর্মীদের লাঠি-লগি-বৈঠা নিয়ে মাঠে নেমে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার নির্দেশনা দিয়েছেন। যে কোনো প্রকারে নির্বাচন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ক্ষমতাসীনদের ভাষায় ‘অগ্নি সন্ত্রাসী’দের প্রতিহত করার নির্দেশনা দিয়েছে। অন্যদিকে আন্দোলনরত দলগুলো ঘোষণা দিয়েছে কোনো অবস্থাতেই তারা জনগণের ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা না করে ঘরে ফিরবেন না। তারা দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবেন না এবং নির্বাচনে চেষ্টা হলে প্রতিহত করবেন। এমতাবস্থায় রাজনৈতিক বিশ্লেষক, অর্থনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা ক্ষমতাসীন দল ও মাঠের বিরোধী দলের মধ্যে রাজপথে সংঘাত-সংঘর্ষে ভয়াবহ রক্তপাতের আশঙ্কা করছেন। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডল থেকে বাংলাদেশ একঘরে হতে পারে এমন আশঙ্কাও করছেন কেউ কেউ।

বিএনপিসহ আন্দোলনরত দলগুলোকে বাদ দিয়ে পাতানো নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। গতকাল এক মতবিনিময় সভায় সংগঠনের নেতারা বলেছেন, দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতায় এককভাবে নির্বাচনের আয়োজন জাতীয় অর্থনীতিকে শঙ্কার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ ঝুঁকিতে পড়েছে। সভায় চলমান রাজনৈতিক সহিংসতা, ডলার সংকট, মূল্যস্ফীতি, বিলাসী পণ্যের আমদানি নিয়ন্ত্রণ, ব্যাংকঋণ, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিতকরণ, এলসির ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরে এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, কয়েক বছর ধরে দেশে অত্যন্ত স্থিতিশীল রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিবেশ ছিল, যা ব্যবসা, বাণিজ্য ও অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু সম্প্রতি রাজনৈতিক দলগুলোর সহিংস কর্মকাণ্ডের ফলে দেশের ব্যবসা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ ঝুঁকিতে পড়ছে। একপক্ষীয় নির্বাচনের আয়োজন হলে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ রূপ নেবে।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় উপনেতা জি এম কাদের বলেছেন, একতরফা নির্বাচনে গেলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে স্যাংশন আসারও সম্ভাবনা রয়েছে। এই অবস্থায় যদি আমরা নির্বাচনে যাই আর যদি পরবর্তীতে সরকার সমস্যায় পরে তাহলে কী হবে? যুক্তরাষ্ট্রের চিঠি এসেছে আমাদের কাছে। এই চিঠির গুরুত্ব অনেক। এটা যুক্তরাষ্ট্রের অফিসিয়াল চিঠি। তারা সংলাপ চাচ্ছেন। ইসলামী আন্দোলনের আমীর মুফতি সৈয়দ মো. রেজাউল করিম আগেই ঘোষণা দিয়েছেন দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হলে নির্বাচন কমিশন কার্যালয় অভিমুখে গণমিছিল করা হবে।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও মাঠের বিরোধী দল বিএনপি সংলাপ করতে শর্ত জুড়ে দিলেও দেশের চলমান সংকটের সুরাহায় সংলাপ জাতীয় দাবিতে পরিণত হয়েছে। গত ১৩ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু চিঠি দিয়ে তিন দলকে (আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি) ত্রি-দলীয় সংলাপের আহ্বান জানিয়েছেন। সরকার সমর্থিত বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও বিএনপি জোটের বাইরে থাকা অনেক দল সংলাপের মাধ্যমে সংকটের সুরাহার আহ্বান জানিয়েছেন। দেশের সংবিধান প্রণেতা বর্ষিয়ান রাজনীতিক ড. কামাল হোসেন গতকাল সংলাপের মাধ্যমে সংকটের সুরাহা করে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন বিলম্ব করতে রাজী নন। আন্তর্জাতিক চাপ, সংলাপের আহ্বান, রাজনৈতিক দলগুলোর মুখোমুখি অবস্থান, রাজপথ ফের রক্তাক্তের আশঙ্কা কোনো কিছুকেই তোয়াক্কা করছে না ইসি। পূর্বসুরি কাজী রকীবুদ্দিন আহমদ ও কে এম নুরুল হুদার মতো তিনিও পাতানো নির্বাচন করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব ইসিকে নীল নকশার নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, একতরফা নির্বাচনের ঘোষণা হবে সংঘাত এবং রক্তপাতকে উস্কানি দেয়া। এর পরিণতি হবে ভয়াবহ। যা রাষ্ট্রকে বিপজ্জনক হুমকির দিকে নিয়ে যাবে।

সাধারণত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে বৈঠক করে নির্বাচন কমিশন। এরপর বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতারে প্রচারের জন্য সিইসির ভাষণ রেকর্ড করা হয়। সন্ধ্যায় ওই ভাষণ প্রচার করা হয়। ওই ভাষণেই মূলত তফসিল ঘোষণা করা হয়ে থাকে। গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জানিয়েছেন, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল দুই একদিনের মধ্যেই নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করবে। এ সময় গণভবনের সঙ্গে ৬৪টি জেলা প্রশাসক যুক্ত ছিলেন। এই জেলা প্রশাসকরা আসন্ন নির্বাচনে মূল দায়িত্বে থাকবেন। এ দিকে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সচিব জাহাংগীর আলম যেন ২০১৮ সালের নির্বাচনের সময় ইসি সচিবের দায়িত্ব পালন করা মো. হেলালুদ্দিনের কার্বন কপি হয়ে গেছেন। গতকাল জাহাংগীর আলম বলেছেন, কমিশন সাংবিধানিক দায়বদ্ধতার আলোকে ঘোষিত রোডম্যাপ (পথ নকশা) অনুযায়ী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে। তার দাবি যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু’র চিঠি তফসিল ঘোষণার ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব ফেলবে না। ডোনাল্ড লু’র চিঠি নিয়ে যখন দেশ-বিদেশের গণমাধ্যমগুলোতে খবরের শিরোনাম হলেও ইসি সচিব বলেন, সংলাপের চিঠির ব্যাপারে তারা অবহিত নন। অবস্থা যেন নির্বাচন কমিশন উটপাখির মতো বালুতে মুখ লুকিয়ে থেকে সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নের নীল নকশায় এগিয়ে যাচ্ছে।

দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের চেষ্টা হলে তা প্রতিহতের ঘোষণা দিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, জনগণের দাবি উপেক্ষা করে এক তরফা নির্বাচন করার জন্য উন্মত্ত-উ™£ান্ত হয়ে গেছে সরকার। শেখ হাসিনা তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে অবৈধভাবে তফসিল দেওয়ার পায়তাঁরা শুরু করেছে। আমরা কঠোর ভাষায় হুঁশিয়ার করে দিতে চাইÑ এই তফসিল নাটক বন্ধ করুন। আগে পদত্যাগ করুন। কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে ক্ষমতা দিন। দাবি না মানলে পরিনতি হবে ভয়ংকর। কোনো প্রহসনের পাতানো নির্বাচন বাংলাদেশের মাটিতে হতে দিবে না।

এদিকে ডোনাল্ড লু’র চিঠি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেছেন, আমরা বহুবার বলেছি যে, বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সমর্থন করি আমরা। আমরা মনে করি, বাংলাদেশে সরকারের বিষয়ে ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে জনগণ। সে জন্যই সংলাপের লক্ষে চিঠি দেয়া হয়েছে।

বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে এর আগে দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৪ সালের বাংলাদেশে ৫ জানুয়ারি। বিএনপিসহ অধিকাংশ দলই বর্জন করে এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্রসহ মাত্র ১৭টি দল নির্বাচনে অংশ নেয়। ওই সময় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ পাতানো নির্বাচন বর্জন করলেও ওই সময় ভারতের স্বরাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিং জাতীয় পার্টিকে নির্বাচনে অংশ নিতে বাধ্য করে। নির্বাচনে ৩০০টি আসনের মধ্যে ১৫৩টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থীরা বিজয়ী হওয়ায় নির্বাচনটি নিয়ে অনেক বিতর্কের সৃষ্টি হয়। শত শত কেন্দ্রে একটি ভোটও পড়েনি। ওই নির্বাচনে কার্যত ভোটের আগেই আসন ভাগাভাগি করা হয়। ১৫৩টি আসনের সদস্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার পর বাকি ১৪৭টি আসনের মধ্যে ১৩৯টি আসনে পাতানো ভোট হয়। যার মধ্যে আওয়ামী লীগ ১০৫টি, জাতীয় পার্টি (এরশাদ) ১৩টি, জেপি মঞ্জু ২টি, ওয়ার্কার্স পার্টি ৪টি, জেএসডি ২টি এবং তরিকত ফেডারেশন ও বিএনএফ একটি করে আসনে জয়লাভ করানো হয়। বাকি ৮টি নির্বাচনী এলাকার পরে ভোট হয়। ভোট প্রদানের হার ছিল ৫ শতাংশের নিচে।

অতঃপর আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের আগে গণভবনে সংলাপের আয়োজন করা হয়। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, ‘আমি কেবল প্রধানমন্ত্রী নই, জাতির পিতার কন্যা। জাতির পিতার কন্যা হিসেবে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি নিরপেক্ষ নির্বাচন করে ইতিহাসে নাম লেখাব।’ কিন্তু সে নির্বাচনের আগের রাতেই হাজার হাজার কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় নৌকার ব্যালটে সিল মারার ঘটনা ঘটে। নির্বাচনের আগেই ২৯ ডিসেম্বর রাতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভোটের আগের রাতেই ব্যালট বক্স ভর্তি করার ঘটনায় সমালোচনা আর নিন্দার ঝড় উঠে দেশে এবং বিদেশে। বিএনপিসহ বাম দলগুলো রাতের ব্যালটে সিল মারার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ তোলেন। ২০১৯ সালে বরিশালের এক সভায় ১৪ দলীয় জোটের নেতা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘আমি স্বাক্ষী দিচ্ছি জনগণ নির্বাচনে ভোট দেয়নি; আমিও ভোট দিতে পারিনি।’ সুশাসনের জন্য নাগরিক নির্বাচনী পর্যবেক্ষণের পর জানায় প্রায় সবগুলো আসনেই রাতে ব্যালটে সিল মারা হয়েছে। ২০১৯ সালের ১৫ জানুয়ারি ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এর এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তাতে বলা হয় জাতীয় নির্বাচনে তাদের বাছাই করা ৫০টি আসনের মধ্যে ৩৩টি আসনে নির্বাচনের আগের রাতে ব্যালটে সিল দেওয়া হয়েছে। সংস্থাটি এই নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ এবং ত্রুটিপূর্ণ বলে মন্তব্য করে। ওই সময় দেশের মানুষ দীর্ঘ তিন মাস অবরোধের কবলে ছিল।

সর্বশেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০২৩, ০১:৪৫
মুক্তিবাণী

পাঠকের মন্তব্য

ফেসবুকে

সর্বশেষ আপডেট

ভিডিও