স্থানীয় একটি মসজিদের দোতলায় ৯ বছরের শিশু ময়না আক্তারের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলায় উত্তাল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। নিখোঁজ হওয়ার পরদিন রোববার (৬ জুলাই) সকালে শাহবাজপুর ইউনিয়নের ছন্দুমিয়া পাড়ার হাবলিপাড়া জামে মসজিদ থেকে তার মরদেহ পাওয়া যায়, যা এলাকাজুড়ে শোক ও আতঙ্ক ছড়িয়েছে ।
ঘটনার বিবরণ:
* নিখোঁজের পরিধি: শনিবার দুপুরে ময়না বাড়ি থেকে খেলতে বের হয় এবং আর ফেরেনি। পরিবার তাকে খুঁজে না পেয়ে সন্ধ্যায় সরাইল থানায় জিডি দাখিল করে এবং গ্রামে মাইকিং করানো হয় ।
* মরদেহ উদ্ধার: পরদিন সকালে মসজিদের দ্বিতীয় তলায় আরবি ক্লাসে আসা শিক্ষার্থীরা তার বিবস্ত্র ও গলায় কাপড় পেঁচানো রক্তাক্ত মরদেহ দেখে। স্থানীয়রা পুলিশে খবর দিলে লাশ উদ্ধার করা হয় ।
* আঘাতের চিহ্ন: মরদেহে শারীরিক নির্যাতনের স্পষ্ট নিশানা রয়েছে। পুলিশ প্রাথমিকভাবে পরিকল্পিত হত্যা বলে অভিমত দিয়েছে, যদিও ধর্ষণ ঘটেছে কিনা তা ময়নাতদন্তের রিপোর্টের ওপর নির্ভরশীল ।
তদন্ত ও প্রতিক্রিয়া:
* গ্রেফতার: মসজিদের ইমাম হামিদুর রহমান ও মুয়াজ্জিন সাইদুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে কোনো আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনা হয়নি ।
* পুলিশি পদক্ষেপ: সরাইল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার তপন সরকার নিশ্চিত করেছেন, ময়নাতদন্ত শেষে আলামত বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। পিবিআইয়ের বিশেষ টিমও তদন্তে যুক্ত হয়েছে ।
* স্থানীয় ক্ষোভ: গ্রামবাসী এই “নির্মম হত্যাকাণ্ডের” দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেছেন। শাহবাজপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা সৈয়দ আমিনুল ইসলামের মতে, “এটি মাগুরার শিশু আছিয়ার ঘটনার পুনরাবৃত্তি” ।
পরবর্তী অবস্থা: মরদেহ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ মসজিদের সিসিটিভি ফুটেজ ও স্থানীয় সাক্ষ্যপ্রমাণ সংগ্রহের চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছে ।
* স্থানীয় এক বাসিন্দার বক্তব্য: “শাহবাজপুরের মতো শান্তিপূর্ণ গ্রামে এমন জঘন্য ঘটনা কল্পনাও করা যায়নি। আমরা শুধু ন্যায়বিচার চাই।”
পাঠকের মন্তব্য