দৈনিক খুলনা টাইমসের সম্পাদক সুমন আহমেদ এবং দৈনিক আমার দেশের স্টাফ রিপোর্টার মো. কামরুল হোসেন মনিকে লক্ষ্য করে দেওয়া প্রাণনাশের হুমকি ও সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ জার্নালিস্ট প্রটেক্ট কমিটি (জেপিসি) এবং খুলনা ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন (কেসিআরএ)। ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে গঠিত সংগঠন জেপিসি এ ঘটনাকে “স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর সরাসরি আঘাত” আখ্যায়িত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে ।
হুমকির বিস্তারিত বিবরণ : ১. সুমন আহমেদের বিরুদ্ধে হুমকি:• খুলনা ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি ও দৈনিক খুলনা টাইমসের সম্পাদক সুমন আহমেদকে “আশিক”নামক শীর্ষ সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর প্রধান হিসেবে পরিচয় দিয়ে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে সপরিবারে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে।
• কেসিআরএ’র নেতৃবৃন্দ এই হুমকিকে “গোটা সাংবাদিক সমাজ ও মুক্ত গণমাধ্যমের প্রতি হুমকি” বলে চিহ্নিত করেছেন ।
২. কামরুল হোসেন মনির অভিযোগ: • গত ২৭ জুন “আশিক” নামে এক ব্যক্তি টেলিফোনে মনিকে বলেন, “আমার লাইফে যদি কোন সমস্যা হয়, আমি কিন্তু কাউকে সুস্থভাবে থাকতে দেবো না” ।
• হুমকির জেরে তিনি ৩ জুলাই খুলনার সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় জিডি (নং-১১২) দায়ের করেন ।
৩. সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব হামলা : সম্প্রতি সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে বহিরাগতদের দ্বারা সাংবাদিকদের উপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়। জেপিসি এ ঘটনাকেও “সাংবাদিকতা পেশায় বাধা সৃষ্টির ষড়যন্ত্র” বলে নিন্দা করেছে ।
সংগঠন ও নেতাদের প্রতিক্রিয়া খুলনা ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন: সহ-সভাপতি নূর হাসান জনি, সাধারণ সম্পাদক আহমদ মুসা রঞ্জু প্রমুখ “হোয়াটসঅ্যাপ হুমকির প্রবণতাকে সাংবাদিক সমাজে আতঙ্কের কারণ” উল্লেখ করে জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত ও কঠোর শাস্তির দাবি জানান ।
জার্নালিস্ট প্রটেক্ট কমিটি (জেপিসি): সভাপতি কৌশিক দে ও সাধারণ সম্পাদক আনিছুর রহমান কবিরের নেতৃত্বে সংগঠনটি ”সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষায় আইনি পদক্ষেপ” চেয়েছেন। তারা উল্লেখ করেন, “সাংবাদিকরা অপরাধীকে অপরাধী বলবে—এটাই স্বাভাবিক”।
স্থানীয় নেতৃত্বের সমর্থন: খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক এবং পুলিশ কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক সম্প্রতি এক সভায় “সাংবাদিকতাকে চতুর্থ স্তম্ভ” অভিহিত করে পেশাগত দায়িত্ব পালনে তাদের সহযোগিতার আশ্বাস দেন ।
⚖️ দাবি ও ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ জেপিসি ও কেসিআরএ’র যৌথ দাবিসমূহ: 1. হুমকি প্রদানকারীদের দ্রুত শনাক্ত ও আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি।
2. সাংবাদিকদের পেশাগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারি-পুলিশি সমন্বয় জোরদারকরণ ।
3. হুমকি ও হামলার ঘটনায় তদন্তে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।
প্রাসঙ্গিক তথ্য: • সুমন আহমেদের ভূমিকা: তিনি গত জুনে কেসিআরএ’র সভাপতি পুনর্নির্বাচিত হন এবং অপরাধ সংবাদ কভারেজে সাহসী ভূমিকা এর জন্য পরিচিত ।
• কামরুল হোসেন মনির অবস্থান : দৈনিক আমার দেশ ও প্রবাহ পত্রিকার সাথে যুক্ত তিনি, এবং স্থানীয় অপরাধ প্রতিবেদনে সক্রিয় ।
মূল বক্তব্য : “হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে সাংবাদিকদের একের পর এক হুমকি শুধু ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য নয়, বরং পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্যও বড় অন্তরায়। এটি স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর সরাসরি আঘাত।” খুলনা ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন।
✊ শেষ কথা : খুলনা ও সাতক্ষীরায় সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এই হুমকি ও হামলা বাংলাদেশে প্রেস ফ্রিডমের ক্রমাবনতির চিত্র ফুটিয়ে তুলেছে। আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় গঠিত জেপিসি-সহ স্থানীয় সংগঠনগুলোর দাবি, এই ঘটনাগুলো যেন “পরাধীনতার শিকলে আবদ্ধ” হওয়ার সূচনা না হয় । সরকার ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দ্রুত হস্তক্ষেপই এখন স্বাধীন মতপ্রকাশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে।
পাঠকের মন্তব্য