সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সংবাদ সম্মেলনে টার্মিনল নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ

ছবি মুক্তিবাণী
ছবি মুক্তিবাণী
সালেহ আহমদ (স’লিপক):

সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনল অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণের কারণে অর্ধেকেরও বেশি গাড়ী রাস্তায় রাখতে হচ্ছে। সেই সাথে নিম্নমানের কাজের কারণে অনেক ক্ষেত্রে এই টার্মিনাল ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। রবিবার (১৩ জুলাই) কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের নতুন ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেছেন সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি নেতৃবৃন্দ। সেই সাথে সমিতির বিভন্ন কর্মকান্ড তুলে ধরেন ও বিভিন্ন দাবি বাস্তবায়নে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আমিনুজ্জামান জোয়াহির।

সংবাদ সম্মেলনে আবারও পাথর কোয়ারি খুলে দিয়ে পাথর সংশ্লিষ্ট প্রত্যেকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চাঙ্গা করার দাবি জানান। বর্তমানে বাজার ব্যবস্থাপনায় দ্রব্য মূল্যের উর্ধ্বগতির অবস্থা অনুপাতে গাড়িভাড়া বৃদ্ধি করা হয়নি। এ অবস্থায় গাড়িভাড়া সামঞ্জস্য করার দাবি জানান তারা। দুর্ঘটনা রোধে আন্ত:জেলা রোডের চালকদের নূন্যতম ৭/৮ ঘন্টা অন্তর হাইওয়ে রোডে বিশ্রামের ব্যবস্থাসহ চালকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণের আহবান জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে পরিবহন নেতৃবৃন্দ বলেন, ২০১৩ সাল থেকে এ পর্যন্ত সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি সিলেট জেলার সর্বস্তরের মালিকদের অর্থাৎ ১৩টি রোড উপ-কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত অ-রাজনৈতিক মালিক সংগঠন। যা দীর্ঘদিন থেকে মালিক-শ্রমিকদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে কাজ করছে। পূর্বের কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় গত বছরের ৫ ডিসেম্বর সাধারণ সভা ও কাউন্সিলের মাধ্যমে ব্লু-বুক/এসি কাগজের মালিকদের নিয়ে ৫৩ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠিত হয়। সংগঠনটি সিলেট জেলার পরিবহন সেক্টরকে আরোও শৃংঙ্খলাবদ্ধ ভাবে এগিয়ে নিতে প্রশাসনসহ মালিক-শ্রমিকদের নিয়ে কাজ শুরু করে। শুরুতে যানজট নিরসনে প্রতিবন্ধকতা দেখা দিলেও প্রশাসন, মালিক-শ্রমিক সার্বক্ষনিক নজরধারীর মাধ্যমে তারা অনেকটা সফল হয়েছেন বলেও জানান।

পরিবহন নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, অবৈধ সিএনজি অটোরিকশার বিরুদ্ধে আমরা ২০১৩ সাল থেকে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে রেজিষ্ট্রেশন বিহীন সিএনজি অটোরিকশা অদক্ষ ড্রাইভার দিয়ে পরিচালিত হওয়ায় প্রায় প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ এর প্রজ্ঞাপনে বাস গাড়ির আয়ুকাল ২০ বছর ও ট্রাকের ২৫ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে তা প্রত্যাহারের দাবিতে গত ১ জুলাই সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির পক্ষ থেকে প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়। তারা বলেন, এটি পরিবহন সেক্টরকে ধ্বংসের পায়তারা এবং গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পরিচালনা করা একটি গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। গণপরিবনের ওপর আরোপিত বর্ধিত ট্যাক্স প্রত্যাহারসহ যন্ত্রাংশের মূল্য বৃদ্ধি, গাড়ির আয়ুকাল ও ফিটনেস সার্টিফিকেট বেসরকারি পর্যায়ে পরিচালনা প্রত্যাহারের আহবান জানান।

সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মাওলানা লোকমান আহমদ কোন গাড়ির মালিক নন বলে প্রচার করা হচ্ছে। অথচ মাওলানা লোকমান সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির ২০০২-২০০৭ পর্যন্ত মহাসচিব ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি সহ-সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পরবর্তীতে ২০০৭-২০০৯ পর্যন্ত সিলেট আন্তঃজেলা চেয়ার কোচ ও বাস মালিক সমিতির সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। স্বৈরাচারী  ফখরউদ্দিন সরকারের সময় যখন বিশেষ করে সিলেটের পরিবহন সেক্টরে অস্থিরতা বিরাজ করছিল তখন মালিক-শ্রমিক ঐক্য গড়তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এবং টাউন বাস মালিক সমিতির পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি দক্ষিণ সুরমা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের শেরপুর টুল প্লাজা দুই লেনের কার্যক্রম চালু না হওয়ার কারণে দীর্ঘ আকারে যানজট লেগে থাকতো। পরবর্তীতে তারা বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে দুই লেন চালুর উদ্যোগ নিলে যানজট মুক্ত পরিবেশে গাড়ি চলাচল করছে। সংবাদ সম্মেলনে সমিতির সভাপতি মাওলানা লোকমান আহমদ সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

মুক্তিবাণী

পাঠকের মন্তব্য

ফেসবুকে

সর্বশেষ আপডেট

ভিডিও