“নতুন পরিচালনায় মৌলভীবাজার পাবলিক লাইব্রেরি: জ্ঞানের আলো ছড়াবে তিন বছর”

ছবি মুক্তিবাণী
ছবি মুক্তিবাণী
বিশেষ প্রতিবেদকঃ

মৌলভীবাজার,২২ জুন ২০২৫ — জেলার প্রাচীনতম জ্ঞান-সংস্কৃতির প্রাণকেন্দ্র মৌলভীবাজার পাবলিক লাইব্রেরি -র নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার (২১ জুন) সন্ধ্যায় লাইব্রেরির সৈয়দ মুজতবা আলী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত বার্ষিক সাধারণ সভায় ১৪ সদস্যের এই কমিটি নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের নতুন যাত্রা শুরু হলো। নবগঠিত কমিটি আগামী তিন বছরে লাইব্রেরির সার্বিক উন্নয়ন, পাঠক সেবা সম্প্রসারণ এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ত্বরান্বিত করবে । 

কমিটির মূল পরিকাঠামো: * সভাপতি (পদাধিকার বলে): জেলা প্রশাসক মোঃ ইসরাইল হোসেন

* সহ-সভাপতি: জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা শামিমা খন্দকার

* সাধারণ সম্পাদক: শাহ আব্দুল অদুদ

* কোষাধ্যক্ষ: জাহেদ আহমেদ চৌধুরী

* কার্যনির্বাহী সদস্যবৃন্দ: মোঃ মাহবুবুর রহমান রাহেল, প্রফেসর মোঃ সেলিম, এডভোকেট আবু তাহের প্রমুখ ।

ঐতিহ্য ও অগ্রাধিকার: ১৯৫৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এই লাইব্রেরি কেবল একটি পাঠাগার নয়; এটি মৌলভীবাজারের সাংস্কৃতিক পরিচয়ের প্রতীক। সংগ্রহশালায় থাকা দুর্লভ পুস্তক, সৈয়দ মুজতবা আলীর নামাঙ্কিত মিলনায়তন এবং নীরব পাঠকক্ষ এটিকে জেলার “গৌরবের প্রতিষ্ঠান”-এ পরিণত করেছে। নতুন কমিটির ঘোষিত লক্ষ্যগুলো হলো:

১. বইয়ের সংগ্রহ বৃদ্ধি (বর্তমান সংগ্রহ: ২০,০০০+ বইয়ের আদলে) ।

২. তরুণ প্রজন্মকে আকর্ষণ করতে ডিজিটাল সেবা সম্প্রসারণ  (ইন্টারনেট সেবা ও ই-লাইব্রেরি) ।

৩. সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের নিয়মিকরণ : রচনা প্রতিযোগিতা, বইমেলা, সাহিত্য সেমিনারের আয়োজন ।

নতুন কমিটির প্রত্যাশা: সাধারণ সম্পাদক শাহ আব্দুল অদুদ জানান, “লাইব্রেরিকে আমরা একটি গতিশীল জ্ঞানকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে চাই, যেখানে পাঠকের পাশাপাশি গবেষক ও লেখকরাও অনুপ্রেরণা পাবেন।” তাঁর এই ঘোষণা জেলাবাসীর প্রত্যাশারই প্রতিধ্বনি ।

প্রাসঙ্গিক প্রেক্ষাপট: মৌলভীবাজারে সরকারি গণগ্রন্থাগার ছাড়াও বেশ কয়েকটি বেসরকারি পাঠাগার সক্রিয়:

* আলোর দিশারী পাঠাগার (১৯৮৬ প্রতিষ্ঠিত, ৩,৭১৫ বই) ।

* বইয়ের কোরাস (২০১৭ প্রতিষ্ঠিত, ৩,৭৫৫ বই) ।

* চুনঘর পাঠাগার (২০১৯ প্রতিষ্ঠিত, ২,৭৫০ বই) ।

নতুন পর্ষদ এগুলোর সাথে সমন্বয় করে জেলাকে “পাঠাভ্যাসের মডেল” হিসাবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছে।

৬৯ বছরের ঐতিহ্যবাহী এই প্রতিষ্ঠান নতুন নেতৃত্বে আবারও জ্ঞানচর্চার বাতিঘর হয়ে উঠবে—এটাই জেলাবাসীর প্রত্যাশা। নতুন কমিটি যদি ডিজিটাল রূপান্তর, সংগ্রহবৈচিত্র্য এবং যুব সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করতে পারে, তবে মৌলভীবাজার পাবলিক লাইব্রেরি জাতীয় পর্যায়েও একটি আদর্শ পাঠকেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।

মুক্তিবাণী

পাঠকের মন্তব্য

ফেসবুকে

সর্বশেষ আপডেট

ভিডিও