জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান মৌলভীবাজারে প্রবীণ নেতা দেওয়ান সিরাজুল ইসলাম মতলিবের পরিবারের সাথে শুক্রবার (২৭ জুন) সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
মরহুমের শাহ মোস্তফা রোডস্থ দেওয়ান মঞ্জিলে অনুষ্ঠিত এ সাক্ষাতে মরহুমের স্ত্রী, দেশে অবস্থানরত তিন ছেলে ও দুই মেয়েসহ পরিবারের সদস্যদের সাথে শোক প্রকাশ করেন। এরপর তিনি মরহুমের গ্রামের বাড়ি মোহাম্মদপুরে কবর জিয়ারত ও মোনাজাত পরিচালনা করেন ।
সাক্ষাৎকারের উল্লেখযোগ্য দিক
১. পরিবারের প্রতি সমবেদনা
• ডা. শফিকুর রহমান মরহুমের ১০ সন্তানের মধ্যে দেশে ফিরে আসা ৫ প্রবাসী সন্তানসহ পরিবারের সদস্যদের সাথে আবেগঘন আলোচনা করেন।
• এ সময় উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের জেলা আমীর ইঞ্জিনিয়ার শাহেদ আলী ,জেলা সেক্রেটারি মোঃ ইয়ামীর আলী, সাবেক আমীর আব্দুল মান্নান ও কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের প্রমূখ ।
২. কবর জিয়ারত ও গণমোনাজাত
• সাক্ষাৎ শেষে ডা. শফিকুর রহমান সদর উপজেলার মোহাম্মদপুর গ্রামে যান, যেখানে মরহুমকে দাফন করা হয়েছে।
• তিনি কবরে ফাতেহা পাঠের পর স্থানীয় শতাধিক মানুষের অংশগ্রহণে মোনাজাত পরিচালনা করেন এবং দেওয়ান মতলিবের “ইসলামী আন্দোলনের প্রতিচ্ছবি” হিসেবে জীবনের সংগ্রামী ইতিহাস স্মরণ করেন ।
মরহুমের জীবন, অবদান, রাজনৈতিক ও সামাজিক ভূমিকা :
• দেওয়ান সিরাজুল ইসলাম মতলিব মৌলভীবাজার জেলা জামায়াতের সাবেক আমীর এবং কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ছিলেন। ১৯৯১ সালে মৌলভীবাজার-৩ আসন থেকে সংসদীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ।
• ইসলামী আন্দোলনে তাঁর ৪ দশকের সংগঠনিক ভূমিকা প্রশংসিত। জামায়াত নেতা মিয়া গোলাম পরওয়ার তাঁকে “অভিভাবক” আখ্যা দিয়েছেন ।
সাহিত্যিক অবদান:
• তিনি ১৫টি বই রচনা করেন, যার মধ্যে “ইসলামী সংগঠন ও আমরা”, “মৃত্যুর পর আমরা কোথায় যাব”, “একটুখানি মিষ্টি হাসি ও ইসলামী আন্দোলন” উল্লেখযোগ্য। এই গ্রন্থগুলো ইসলামী চিন্তাধারা ও সামাজিক সংস্কারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে ।
ইন্তেকাল: ১৮ জুন সন্ধ্যায় সিলেট ইবনে সিনা হাসপাতালে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ইন্তেকাল করেন (বয়স ৮০ বছর)। তাঁর জানাজায় কয়েক হাজার শোকার্থী অংশ নেয় ।
আমীরের শোকবাণী: মূল বক্তব্য ডা. শফিকুর রহমান মরহুমকে “দক্ষ সংগঠক, ন্যায়ভিত্তিক সমাজের রূপকার ও ইসলামী আন্দোলনের নিবেদিতপ্রাণ দাঈ” হিসেবে উল্লেখ করেন। তাঁর মৃত্যুকে “সম্পূর্ণ জামায়াতের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি” আখ্যায়িত করে বলেন, “তাঁর চেহারা দেখলেই প্রশান্তি পাওয়া যেত—প্রজ্ঞা ও আন্তরিকতায় তিনি মানুষকে দ্বীনের পথে আহ্বান করতেন”।
শেষ কথা: আদর্শের ধারক হয়ে ডা. শফিকুর রহমানের এই সাক্ষাৎ ও কবর জিয়ারত কেবল শোকপ্রকাশ নয়, বরং দেওয়ান মতলিবের “সদাচার, বিনয় ও ধৈর্যের আদর্শ” ধারণের অঙ্গীকারের প্রতীক। জামায়াত নেতৃত্বের এই ঐক্যবদ্ধ পদক্ষেপ মরহুমের রুহের মাগফিরাত ও তাঁর পরিবারের জন্য সাবরে জামিল কামনায় নিবেদিত।
> “মৃত্যু থেকে শিক্ষা: প্রতিটি মুহূর্ত নেক আমলে ভরিয়ে প্রস্তুত থাকাই মুমিনের কাজ”
> —বলেন মিয়া গোলাম পরওয়ার, দেওয়ান মতলিবের জানাজায়।
পাঠকের মন্তব্য