শ্রীমঙ্গলে নিখোঁজ কিশোরী রীমাকে সিলেট থেকে উদ্ধার, গ্রেফতার ৪

মোঃ জহিরুল ইসলাম শ্রীমঙ্গল

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলেনিখোঁজ হওয়া কিশোরী রীমা সরকার (১৪) কে সিলেট থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার বিকালে শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ ও র‍্যাব-৯ এর যৌথ এক অভিযানে তাকে উদ্ধার করা হয় এবং এ ঘটনায় জড়িত আরও চারজনকে গ্রেফতার করা হয়।

ছবি মুক্তিবাণী

ঘটনার সূত্রপাত: গত ২৯ সেপ্টেম্বর,দুর্গাপূজার সপ্তমীর দিনে শ্রীমঙ্গল শহরের আর.কে. মিশন রোডের দুর্গা মন্দিরে অঞ্জলি দিতে গিয়ে রীমা রানী সরকার নিখোঁজ হন। এ ঘটনাকে সামনে রেখে একটি চক্র অনলাইনে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়িয়ে অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা চালায় বলে জানা গেছে।

ছবি মুক্তিবাণী

মামলা ও তদন্ত: রীমার পিতামতি লাল সরকারের দেওয়া অভিযোগের  উপর ভিত্তি করে মামলা দায়ের করা হয়। বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি ও সিলেট রেঞ্জের ডিআইজির দিক নির্দেশনায় এবং মৌলভীবাজার পুলিশ সুপারের তত্ত্বাবধানে শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ তদন্ত জোরদার করে। সিসি টিভি ফুটেজ ও তথ্য-প্রযুক্তির বিশ্লেষণের মাধ্যমে তারা ধারাবাহিক অভিযান চালায়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৮ ও ১১ অক্টোবর দুই আসামি বদরুল আলম (২৫) ও শহিদ মিয়া (৩২)-কে গ্রেফতার করা হয়।

ছবি মুক্তিবাণী

মাসির কূটচাল ও চূড়ান্ত উদ্ধার: তদন্তেএকটি নতুন মোড় নেয় যখন ভিকটিমের খালা প্রিয়াংকা সরকারের মোবাইল ফোনের কল রেকর্ড বিশ্লেষণ করা হয়। এখান থেকে জানা যায় যে, রীমাকে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থানার ধরাধরপুর এলাকায় তার আরেক খালা শিল্পী সরকার (ওরফে শিল্পী বেগম) ও তার স্বামী মোবারক মিয়ার ভাড়া বাসায় আটক করে রাখা হয়েছে।

তদন্তে প্রকাশ পায়, শিল্পী সরকার প্রায় দুই বছর আগে মোবারক মিয়ার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের কারণে ধর্মান্তরিত হয়ে তার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ঘটনার দিন তিনি পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী মন্দিরের কাছে অপেক্ষা করছিলেন। অঞ্জলি শেষে ফেরার পথে তিনি রীমাকে প্রলোভন দেখিয়ে সিলেটে নিয়ে যান এবং তার সঙ্গে পরিবারের সব ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। রীমার মা ঘটনার পর শিল্পী সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তিনি রীমার বিষয়ে কোনো তথ্য দেননি।

অবশেষে, গত শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশের একটি বিশেষ অভিযানে রীমাকে উদ্ধার করা হয় এবং শিল্পী সরকার ও তার স্বামী মোবারক মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতদের তালিকা: ১.শিল্পী সরকার (ওরফে শিল্পী বেগম) – ভিকটিমের খালা

২.মোবারক মিয়া – শিল্পী সরকারের স্বামী

৩.বদরুল আলম (২৫) – প্রথম দিকে গ্রেফতার

৪.শহিদ মিয়া (৩২) – প্রথম দিকে গ্রেফতার

তদন্তের জটিল দিক: প্রাথমিকভাবেরীমার মাসি প্রিয়াংকা সরকার ও তার বোনের সঙ্গে রীমার গোপনে ফোনালাপের বিষয়টি ধরা পড়ে। তবে, পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে এই যোগাযোগের বিষয়টি প্রথমে তদন্তকারী কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়নি। এছাড়া, গ্রেফতারকৃত বদরুল ও শহিদের সাথে প্রিয়াংকার পরিচয় ছিল এবং ঘটনার দিন বদরুল তার ফোনে একাধিকবার কল করেছিল। এ কারণে রীমার পিতা প্রথমে তাদের বিরুদ্ধেই মামলা দায়ের করেছিলেন। তবে, তাদের কাছ থেকে রীমার অবস্থান সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ কোনো তথ্য না মেলায় আদালতে সোপর্দ করা হয়।

বিশেষ দ্রষ্টব্য: সংবাদ পরিবেশনের সময় সকলের প্রতি সম্মান রেখে এবং ঘটনার সত্যতা ও সংবেদনশীলতা বিবেচনা করে প্রতিবেদন তৈরির অনুরোধ করা হলো।

মুক্তিবাণী

পাঠকের মন্তব্য

ফেসবুকে

সর্বশেষ আপডেট

ভিডিও